বিসমিল্লাহ এর বিবরণ
হাদিসের মধ্যে উল্লেখ আছে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলিয়াছেন- কেহ যদি বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পাঠ করে তবে আল্লাহ তায়ালা কেরামন কাতেবীন ফিরিস্তাদের আদেশ করিবেন, উক্ত ব্যক্তির আমল নামায় বেহেশতের মার্যাদা চার লক্ষগুন বাড়াইয়া দিবে এবং চার লক্ষ বদ আমল কমাইয়া দিবে ।
অন্য এক হাদিসে উল্লেখ আছে- যে কোন লোক আল্লাহ তায়ালার তাজীমের উদ্দেশ্যে বিসমিল্লাহ লিখিবে, তিনি তাহার পূর্বকৃত সমস্ত গুনাহ মাফ করিয়া দিবেন ।
বিসমিল্লাহর আমলের প্রথম পদ্ধতি
বিসমিল্লাহ্র আমল করিতে হইলে, প্রথমে নাফরমানী খাহেশ সমূহ পরিত্যাগ করিতে হইবে এবং গুনাহের কার্য সমূহ বর্জন করিতে হইবে । মাসের প্রথম হইতে আমল আরম্ভ করিতে হইবে । ইহার তিনটি নিয়ম আছে যথাঃ-
১। সহস্র দৈনিক এক হাজার বার পড়িবে, দশ দিনে মোট দশ হাজার হইবে ।
২। শতক, প্রত্যহ একশত বার করিয়া পড়িবে । দশ দিনে এক হাজার বার হইবে ।
৩। দশক, দৈনিক দশবার করিয়া পড়িবে । দশ দিনে একশত হইবে । এই তিন প্রকার আমলের যে কোন এক প্রকার নিয়ম আমল করিবে । তবে প্রথম নিয়ম আমল করা উত্তম ।
নিদ্ধারিত মুদ্দত শেষ হইলে প্রত্যহ একশত বার করিয়া পড়িবে । অতঃপর যেই প্রয়োজনের জন্য আমল করা হইবে, আল্লাহর রহমতে উহা পুরা হইবে ।
৭৮৬ বার বিসমিল্লাহ পড়ার ফজিলত
দৈনিক "বিসমিল্লাহ্" সাতশত ছিয়াশী বার পাঠ করিবে । এইভাবে পরপর চল্লিশ দিন যাবত পাঠ করিবে । ইহার পর দৈনিক একশত বত্রিশ বার পাঠ করিবে । ইহার পর অন্য কোন প্রয়োজনে দেখা দিলে, ঊনিশ দিন পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময় ঊনিশবার করিয়া পাঠ করিবে । আল্লাহর রহমতে যে কোণ প্রয়োজনে পুরা হইবে ।
বিসমিল্লাহ্র আমলের তৃতীয় পদ্ধতি
মুনাবিবরুল কূলূব কিতাবে উল্লেখ আছে যে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে- তিনি বলিয়াছেন, আল্লাহর নিকট কোন ব্যাক্তির কোন কিছুর প্রয়োজন দেখা দিলে, তাহার কর্তব্য হইতেছে, সে ব্যক্তি বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পর পর তিন দিন রোজা রাখিবে এবং শুক্রবার দিন জুম্মার নামাজের পূর্বে গোসল করে মসজিদে যাইবে এবং কিছু টাকা পয়সা দান করিবে আর জুম্মার নামাজের আগে অশ্রু পূর্ণ নয়নে এই দোয়া পাঠ করিবে --
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী আস্য়ালুকা বিইসমিকা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম । হুওয়াল্লাহুল্লাযী লা-ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, লা-তা'খুযুহু সিনাতুওঁ ওয়ালা নাউম, লাহু মাফিচ্ছামাওয়াতি ওয়া মাফিল আরদ্বি মান্যাল্লাযী ইয়াশফাউ ই'ন্দাহু ইল্লা বি ইয্নিহী ইয়া লামু মা বাইনা আইদীহীম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়া আসয়ালুকা বিইস্মিকা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম, আল্লাযী আ'নাতিল উজুহু লিল্ হাইয়্যিল ক্বাইয়্যুমি ওয়া খাশআ'ত লাহুল আস্ওয়াতু ওয়া ওয়াজিলাতিল কুলুবু মিন খাশিয়াতিহী আন তুছাল্লিয়া আ'লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ"লা আলি মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আন্ তাক্বদিয়া হাযাতী ।
এই দোয়া পাঠ করিবার পরে নিজের প্রয়োজনীয় বিষয়ের নাম উল্লেখ করিয়া দৃঢ় আশা রাখিয়ে যে, আমার অমুক প্রয়োজনীয় উদ্দেশ্য সফল হউক । আল্লাহর নিকট এই দোয়া করিবে ।
বিসমিল্লাহ্র আমলের চতুর্থ পদ্ধতি
মোহাক্কেক আলেমগন বলিয়াছেন, যদি কোন লোক "বিসমিল্লাহ্" ছয়শত ছিয়াশী বার কাগজে লিখিয়া কবজ বানাইয়া নিজের শরীরে ব্যবহার করে , তবে সৃষ্টি জগতের নিকট তাহার মান-মর্যাদা বর্তমান থাকিবে ।
বিসমিল্লাহ্র আমলের পঞ্চম পদ্ধতি
যদি কোন লোক "বিসমিল্লাহ্" সাতশত ছিয়াশীবার পাঠ করিয়া প্রতিবারে পানিতে ফুক দিয়া ঐ পানি কাহাকেও পান করাইলে উভয়ের মধ্যে মহব্বত পয়দা হইবে । আর যদি ঐ পানি স্মরণ শক্তিহীন ছেলে-মেয়েকে পান করায় তবে স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি হইবে ।
বিসমিল্লাহ্র আমলের ষষ্ঠ পদ্ধতি
চন্দ্র মাসের প্রথম শুক্রবার দিন সূর্য উদয়ের পরে দুই রাক্যাত নফল নামাজ আদায় করিয়া নিম্মের বিসমিল্লাহ্র নকশাটি লিখিয়া পাঠ করিয়া কবজ বানাইয়া হাতে ব্যবহার করিলে, আল্লাহর রহমতে তাহার দিলের যে কোন উদ্দেশ্য বা হাযত পুর্ণ হইবে । নকশা এইঃ
বিসমিল্লাহ্র আমলের সপ্তম পদ্ধতি
কোন লোক যদি অত্যাচারীর অত্যাচারে অতিষ্ট হইয়া উহা দূর করিবার উদ্দেশ্যে নিচের নকশাটি রাঙ্গের পাতে খুদিয়া নকশার মধ্যে ফলনের স্থলে অত্যাচারীর নাম লিখিয়া উহার উপরে হিঙ্গব ( বৃক্ষের রশ বা কশ) লেপন করিয়া চুলার অগ্নিতে ফেলিয়া দিবে । আল্লাহর রহমতে অত্যাচারীর অত্যাচার বন্ধ হইয়া যাইবে ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন